উত্তপ্ত হচ্ছে ধরণী, শঙ্কিত বিশ্ববাসী : যুব সমাজের করণীয়।

মাে: আব্দুল কাদরে
সহকারী পরচিালক
যুব উন্নয়ন অধদিপ্তর ,সাতক্ষীরা ।

“মরিতে চাহিনা এই সুন্দর ভ‚বনে
মানবের মাঝে আমি বাচিবার চাই”
কবির এই বক্তব্যের সঙ্গে আমারা প্রায় সকলে একমত। রূপরস, গন্ধ আর মায়া মমতায় ঘেরা এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে কেউ যেতে চায় না। শুধু মানুষ নয় সৃষ্টিক‚লের প্রতি প্রাণীই এই সুন্দর পৃথিবীতে চিরদিন বাঁচতে চায়। কিন্তু কারো পক্ষেই তো আর চিরদিন বাঁচা সম্বব নয়। এ যাবৎ আবিষ্কৃত সকল গ্রহের মধ্যে এখনও পৃথিবী নামক গ্রহটি মানবসহ সকল প্রাণীক‚লের বসবাসের জন্য উপযোগী এবং নিরাপদ। কিন্তু মানুষের কৃতকর্মের জন্য আস্তে আস্তে এই গ্রহটি মানবসহ সকল প্রাণীক‚লের বসবাসের জন্য অনপোযোগী হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে ডাইনোসারসহ অনেক শক্তিশালী প্রাণী পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ক্রমান্বয়ে আরও অনেক উদ্ভিদ এবং প্রাণী পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এসব কিছুর র্মুলে রয়েছে আবহাওয়ার পরিবর্তন। যাকে আমরা সংক্ষেপে বলছি ক্লাইমেট চেঞ্জ। আর আবহাওয়ার এই পরিবর্তন হচ্ছে সৃষ্টি জগতের সবচেয়ে সভ্যপ্রাণী মানুষের দ্বারা, যারা নিজেদের বাসস্থানকে ক্রমান্বয়ে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যচ্ছে।

বৈশি^ক জলবায়ু পরিবর্তন মানব সভ্যতার জন্য আজ সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। এই সুদূর প্রসারী প্রভাবের ফলে ঝুঁকির মুখে পড়বে মানুষের বিবিধ মৌলিক অধিকার ও নিরাপত্তা। এসব অধিকার ও নিরাপত্তার মধ্যে মানুষের জীবন ও সম্পদ, খাদ্য, নিরাপদ পানি, স্বাস্থ্য, বসতি, ভ‚মি, জীবন-জীবিকার উৎস কর্মসংস্থান এবং তাদের উন্নয়নের অধিকার ও রয়েছে। জাতিসংঘসহ নানা আন্তর্জাতিক সংস্থা জলবায়ু পরিবর্তন ও জলবায়ু উদ্বাস্তু সমস্যাকে উন্নয়ন, দারিদ্র নিরসন ও খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত করে দেখছে। কেননা, জলবায়ু সংক্রান্ত প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে লাখ লাখ লোক তাদের বসতভিটা ছেড়ে শহরের বস্তিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। তারা বঞ্চিত হবে তাদের মানবাধিকার, যথা -খাদ্য ও পানি, উন্নয়নের অধিকার এবং তাদের নিজস্ব সমাজ ও সংস্কৃতিতে বসবাসের অধিকার থেকে।
জলবায়ু পরিবর্তন প্রায় সব প্রতিবেশ, সমাজ ও অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে। কিন্তু এই ক্ষতিকর প্রভাব তাদের ভৌগলিক অবস্থান, অর্থনৈতিক অবস্থা, উন্নয়নের ইতিহাস ও সরকারের সক্ষমতা তথা শাসন পদ্ধতি ও ধরন অনুযায়ি বিভিন্ন হবে। জলবায়ূ পরিবর্তনের অভিঘাত ও জলবায়ু সংশ্লিষ্ট প্রাকৃতিক দুযোগ দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে সবচেয়ে বেশি বিপদাপন্ন করে তুলবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পৌনঃপৌুনিক বৃদ্ধিসহ দীর্ঘস্থায়ী বন্যা, ঘূণিঝড় জলোচ্ছাস, লবণাক্ততার প্রবেশ, সমুদ্রপৃষ্ঠেরউচ্চতা বৃদ্ধি ও খরা অন্যতম। বিশ^ সম্প্রদায় যদি এখনই জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলার প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন না করে , তাহলে জলবায়ুপরিবর্তন বৈশি^কদারিদ্র ও মানুষের খাদ্য, পানি , স্বাস্থ্য, জ্বালানি সমস্যা, সামাজিক নিরাপত্তার সমস্যা ও তীব্রতর করবে। আঞ্চলিক বৈষম্য তীব্রতর ও মৌলিক মানবাধিকার গুলো লঙ্ঘিত হবে।এসবের ফলে নিকট-ভবিষ্যতে ২০ কোটিরও বেশি মানুষ বাসÍুভিটা চ্যুত হতে পারে।ফলে বিশ^ব্যাপী জলবায়ু শরণার্থীর সংখ্যা বাড়বে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপ রাস্ট ্রগুলো নি¤œ ব-দ্বীপঅঞ্চল এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোয় জলবায়ু শরণার্থীর সংখ্যা বাড়বে। গতি গ্রাম থেকে শহরে , এমনকী দেশ থেকে দেশে (বিপদাপন্ন দেশ থেকে অন্যদেশে) মানুষের স্থানান্তর বৃদ্ধি করবে। এই অভ্যান্তরিন ও বহিদেশীয় স্থানান্তরিত জনগোষ্ঠি পৃথিবীর বিভিন্œ প্রান্তে তৈরি করবে নতুন নতুন সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা। উন্নয়নশীল দেশগুলোর দরিদ্র জনগোষ্ঠীই এ ক্ষেত্রে সবচেয় চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
বাংলাদেশ,মিয়ানমার,ফিলিপাইন,ভিয়েতনাম,পাকিসÍান ও থাইল্যান্ড জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রসÍ ১০টি দেশের তালিকায় রেখে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবি’র এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, দারিদ্র বিমোচন ব্যাপক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সাহায্য করেছে এমন অসাধারন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অনেকেটা পূর্বাস্থায় ফিরিয়ে নিতে পারে পরিবেশ বিপর্যয়। (এডিবি প্রতিবেদন তারিখ-১৪-৭-১৭)।

প্রতিবেদনে বলা হয় ক্রমাগত জীবাশ্ন জালানীর ব্যবহারে তাপমাত্র বৃদ্ধি পাচ্ছে,সমুদ্রের উচ্চতা বাড়ছে, বৃষ্টির সময় ও পরিমাণে পরির্বতন ঘটছে যা একই সঙ্গে জীবনযাত্রায় মারাতœক ব্যঘাত সৃষ্টি ছাড়াও যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অস্তিশীল জলবায়ু পরিবর্তন। ফলে কয়েক দশকের উন্নয়ন অগ্রগতিতে পরিবর্তন যথেষ্ট হয়ে ওঠেনি। শিল্প দূষনের ফলে তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে না পারলে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এশিয়ার দেশগুলোর গরিব মানুষ। এজন্যে বিশ^ উষ্ঞতা ২ডিগ্রি সেলসিয়াস কমিয়ে আনা জরুরি।
এডিবির প্রতিবেদনে বলা হয়,উষঞতা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। যা অনেক দেশের পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। বিপর্যয়ের পাশাপাশি পর্যটন ও মৎস খাত ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অতিরিক্ত বরফ গলায় বন্যা ও খরা কৃষিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে ।বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভরতা বাড়লেও সময়মত তা পাওয়া না গেলে কৃষিতে ফসলহানি হবে ব্যাপক ।প্রতিবেদনে আরো বলা হয়,তাপমাএা হ্রাস করা না গেলে ২০৫০ সাল নাগাদ বছরে এশিয়ার ৫২ হাজার বয়স্ক মানুষ মারা যাবে ।্্্্্্্্্একই সময়ে ডায়রিয়ায় আরো ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার মানুষ মারা যাবে ম্যালেরিয়ার ও ডেঙ্গু রোগে ।আবহাওয়াগত এধরনের বিপর্যয় শুধু ্্্্্্এশিয়ায় সরবরাহ ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না বরং বিশে^র অন্য স্থানের সঙ্গেও তা বিপর্যয়ের সৃষ্টি করবে । গত ২৫ বছরে এশিয়ায় মাথা পিছু আয় ১০ গুন বৃদ্ধি পেলেও পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে এখনো এ অঞ্চলে বিশে^র অধিকাংশ গরিব মানুষ বাস করছে ।
আবহাওয়ার এই পরিবর্তন রোধে যুব সমাজের করণীয় :-
জলবায়ুর পরিবর্তন রোধে যুব সমাজ অভ্যন্তরীণ এবং আন্তজাতিক দুই ভাবে ভুমিকা রাখতে পারে।
ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ হচ্ছে সবচেয়ে দূর্যোগ প্রবণ অঞ্চল । সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে প্রতিবছর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে ২ দশমিক ৫ মিলিমিটার করে। আর আইপিসিসির,র প্রতিবেদন অনুযায়ী,সমূদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১ মিটার বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের ১৭ শতাংশ ভূমি সমূদ্রে তলিয়ে যাবে।ফলে অবস্থা কতটা ভয়াবহ হবে তা বুঝায় যাচ্ছে। বাংলাদেশের পরিবেশের মাত্রাতিরিক্ত দূষণের ফলে গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়া , ঘূর্ণিঝড়,জলোচ্ছাস , বন্যা,সিডর ,আইলা,খরা,অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি,জলাবদ্ধতা, বরফগলা,সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি, ফসল উৎপাদন হ্রাস,মৎস উৎপাদন হ্রাস ও বিলুপ্তি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি ,আ্যসিড বৃষ্টি ও নতুন নতুন কঠিন রোগ সৃষ্টির বাস্তবাতয় পরিবেশের বিপর্যয় আর ভবিষ্যতের ভয় নয় বিপদ এখন দোরগড়ায় ।
বর্তমানে বিশে^র মোট জনসংখ্যার ৬৫% তরুণ। জাতিসংঘ তথ্যমতে,৮৫% যুবকই উন্নয়নশীল দেশে বসবাস করে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে এটি ৮৯.৫% হবে। তাই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জনসখ্যার বৃহদাংশ তরুন এই বৃহদাংশ তরুণদের উপযুক্ত শিক্ষা,প্রশিক্ষণ, মানবিক মূলবোধ ও স্বদেশ প্রেমের সমন্বয়ে তাদেরকে সচেতন পরিবেশ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় তরুণদের জ্ঞান,মেধা-মনন ও সৃষ্টিশীলতাকে কাজে লাগাতে হবে। আর এ জন্য তরুণদের মধ্যে পরিবেশ বিষয়ক জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ সম্পর্কিত কুইজ, বিতর্ক, ক্লাইমেট চ্যাম্পিয়ানস প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাস্কন এবং শোভাযাত্রর আয়োজন করা যেতে পারে। তরুণদের পরিবেশ রক্ষায় কার্যকর ভ‚মিকা রাখতে হলে গবেষণা আবশ্যক।গবেষণার মাধ্যমেই পরিবেশ রক্ষার চ্যালেঞ্জগুলো জানা যাবে এবং সমাধান করা যাবে ।
পরিবেশ সংরক্ষণে ও জনসচেতনতায় তরুণরা যে ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে তা নিন্মরূপ –
ক) পরিবেশ বিজ্ঞানে জ্ঞান রাখা
বাংলাদেশের মাত্র ১০-২০% জনগণ পরিবেশগত সমস্যা সম্পর্কে সচেতন া বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও উল্লেখযোগ্য অংশের পরিবেশ বিজ্ঞান সম্পর্কে ধারণা নেই তাই তাদের পরিবেশও তার দূষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা উচিত।
খ) বায়ু দূষণ রোধে করণীয়ঃ
১. বায়ু দূষণের জন্য দায়ী ঘঐ৪,পড়,পড়২,চই,উটঝঞ,অমৎরপঁষঃঁৎধষ পযবসরপধষং,ঈ৬ঐ৬ প্রভৃতি সম্পর্কে জ্ঞানার্জন ও পরিবেশকে এগুলোর ক্ষতি থেকে বাচঁনোর উপায় জনগণকে বলে দেওয়া।
২. ধূমপানের ধেঁিয়া, যানবাহন ওকলকারখানার ধোঁয়া ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করার উপর জনমত সৃষ্টি করা।
৩. গীন হাউজ গ্যাসের কারনে উষ্ঞতা বৃদ্ধি রোধে যতœবান থাকা প্রয়োজন।

৪. ওজোন স্তরে গর্ত হয়ে যে সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম¦াবনা আছে তা প্রতিরোধের উপায় জনগনকে জানানো উচিত ।
৫ জনগনকে বন ও জলাশয় সংরক্ষণ ওব্যাপক বৃক্ষরোপনে উৎস্াহী করা ।
৬. পুরোনো ও দ্্্্ুই ্্্্্্্্্্্্ইঞ্চিন চালিত বাহন পরিহার করে প্রাকৃতিক গ্যাস (ঈঘএ) চালিত বাহন ব্যবহার করা ।
৭. ধরণ অনুযায়ী আবর্জ্নাকে পৃথক করে জমা ও অপসারণ করতে উদ্ধুদ্ধকরা ।
৮. অতিরিক্ত আরোসল ও অন্যান্য স্প্রে ব্যবহার না করা ।
গ) পানি দূষণ প্রতিরোধ:
পানিকে দূষণমুকÍ রাখতে তরুণদের যা যা করা উচিত তা নিম্নরূপ :
১. পানিতে আবর্জনা,কীটনাশক ,সার বা বিষাক্ত দ্রব্য ইত্যাদি না ফেলা ।
২. ধিঃবৎ ঃৎবধঃসবহঃ ঢ়ষধহঃ স্হাপনে উদ্ধুদ্ধকরন।
৩. উপযুক্ত পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা।
৪. ভ‚গর্ভস্থ পানির পরিমিত ব্যবহার।
৫. জমিতে সার বা কীটনাশক প্রয়োগের ফলে জলাশয়ে সৃষ্ট সমস্যা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা।
৬. হাজারীবাগ ট্যানারী কর্তৃক বুড়ি গঙ্গার পানি দূষণের মতো কোন কলকারখানার বর্জ্যই যেন কোন জলাশয়ে পতিত হতে না পারে সে ব্যাপারে জনমত সৃষ্টি করা।
৭. কোন কোন এলাকার ভ‚গর্ভস্থ পানিতে ০.০৫ পিপিএম এর বেশি আর্সেনিক আছে তা জানা এবং এর বিষক্রিয়া সম্পর্কে জনগণকে
সচেতন করা। প্রয়োজনে দূষণ অঞ্চলের মানচিত্র প্রস্তুত করা।
৮. পানি দূষন রোধে জনসাধারণ ও তরুণরা মিলে স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগ গ্রহন করা (যেমন : বদ্ধ জলাশয়কে কচুরিপানামুক্ত করন।)
ঘ) মাটিকে দূষনমুক্ত রাখা :
মাটি দূষণ রোধে নিন্মোক্ত কাজগুলো সম্পাদন করা যেতে পারে :-
১. প্যালাস্টিক ব্যাগ, পলিথিন পরিহার।
২. বৃক্ষরোপন, পাহাড় ও উচ্চভ‚মি রক্ষা ইত্যাদির দ্বারা ভ‚মিক্ষয় রোধে উদ্বুদ্ধকরণ।
৩. ভ‚মিতে অপরিকল্পিত শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের কুফল সম্পর্কে জনগনকে সচেতন কর।
৪. কৃষকদের জৈব সার ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণ।
৫. কৃষকদের জড়ধঃরড়হ ড়ভ পৎড়ঢ়ং নীতি অনুসরণের গুরুত্ব বঝানো।
৬। ইটের বিকল্পে বøক ইট ব্যবহ্রা :
বাংলাদেশের পরিবেশ বিপর্যয়ের ও উষতা বৃদ্ধির প্রধান কারন সনাতন পদ্ধতির ইটভাটা গুলো। এই ইটভাটার ফলে নষ্ট হচ্ছে ভ‚সÍরের ভারসাম্য, ব্যহত হচ্ছে কৃষিকাজ এবং দেখা দিচ্ছে মারাতœক সব জটিল রোগ। উন্নত বিশ^সহ বিশে^র সব দেশের বালু ও সিমেন্ট দিয়ে প্রস্তকৃত বøক ইট ব্যবহৃত হচ্ছে; যার গুনাগত মান পোড়া ইট থেকে অনেক ভাল। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল দিয়ে বহমান ৫৪ টি বড় নদীসহ অসংখ্য ছোট নদী ও খাল বালুতে ভর্তি হয়ে আছে। এসাব বালু ব্যবহার করে উন্নত মানের বøক ইট তৈরি করলে একদিকে নদীগুলো খনন হয়ে যাবে, অপরদিকে মানসম্পন্ন বøক ইট প্রস্তত হবে। ফলে সাশ্রয় হবে কয়লা ফার্নেস অয়েল, আমদানির জন্য ব্যবহৃত বৈদিশিক মুদ্রা, নিরুৎসাহিত হবে গাছ কাটা। নিচু হবে না দেশের ভ‚মি এবং দেশ ও জাতি রক্ষা পাবে পরিবেশের মহাবিপর্যয়ের হাত থেকে।
ঙ) শব্দ দূষণ রোধ:
শব্দ দূষণ রেধে আমাদের করণীয় নিন্মরুপ:
১. জোরে রেডিও/টিভি/গান না বাজানো।
২.হাইড্রোলিক হর্ণের ব্যবহার /অতিরিক্ত শব্দে মাইকের ব্যবহার /নির্মাণ কাজ ও কারখানার উচ্চ শব্দে /ক্যাম্পাসে
গোলাগুলি বোমাবজী/বিকট আওয়াজে শ্লোগান ইত্যাদির বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করা।
৩.শব্দ শোষক যন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।
চ)পরিবেশ সংক্রান্ত আইন মেনে চলা।
জ)স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা।
ঝ)সামাজিক দায়িত্ব পালন করা।
ঞ)পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকতে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনের আন্দোলনের সাথে যুক্ত থাকা।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যুবদের সামনে মূল করণীয হচ্ছে :-
ক)জলবায়ুর পরিবর্তন রোধে ২০১২ সাল-পরবর্তী প্রতিশ্রæতি পূরণের অংশ হিসেবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর বৃহত্তর অংশগ্রহণে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন নিরসনের কৌশল এবং এ লক্ষ্যে কার্যকর ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করার জন্য যুবরা আন্তর্জাতিক যুব সংগঠন বেসরকারী সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সংগে যোগাযোগের মাধ্যমে জনমত সৃষ্টি ও বড় বড় রাষ্টের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
খ)অপেক্ষাকৃত উ জলবায়ু ও পরিবর্তিত অবস্থায় কীভাবে টিকে থাকা যায়, বা কার্যকর অভিযোজন করা যায়,এর কৌশল উদ্ভাবন
করতে হবে। কেননা এ অবস্থা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই্।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ^জুড়ে চলমান তাপমাত্রা বৃদ্ধির আতœঘাতী সর্বনাশ থেকে দুনিয়াকে বাঁচাতে চাইলে মানব জাতির হাতে আর মাত্র তিন বছর সময় আছে। একথা বলেছে বিখ্যাত সাময়িকী নেচার। পরিবেশ-জলবায়ু ও প্রাকৃতিক পরিবেশ বিষয়ে খ্যাতিমান এই পত্রিকা সম্প্রতি বিজ্ঞানী ও গবেষকদের বরাতে জানায়, গ্রিননহাউস গ্যাসের নির্গমণ ইতিবাচক হারে কমিয়ে আনার কাজ শুরু করতে এখন আর মাত্র ৩ বছর সময় হতে আছে। এই সময় সীমার মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের নির্গমণ কমানো না গেলে প্যারিস ঘোষনায় বিশে^র তাপমাত্র্রা নিয়ন্ত্রনের যে লক্ষমাত্র নির্ধারন করা হয়েছিল, তা কার্যত অসম্বভ হয়ে পড়বে। একই সংঙ্গে পরিস্থিতি মানুষের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রোধে বাংলাদেশের সাফল্য
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর ও বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশ ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে। আর্থিক সীমাব্দতা পরও নিজস্ব অর্থায়নে ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করে গোটা বিশে^র রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। বিশে^র কোন দেশে নিজস্ব তহাবিলে এধরনের ফান্ড গঠনের কোন নজির নেই। এ পর্যন্ত এই ট্রাস্ট ফান্ডকে সরকারি তহবিল থেকে বরাদ্দ দেওয়া ৩ হাজার কোটি টাকায় গ্রহন করা হয়েছে ৩৬৮ টি প্রকল্প। পাশাপাশি বিষয়টি সবোর্চ্চ গুরুত্ব দিয়ে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভবিষৎ প্রজন্মের জন্য ও পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। এটিও বিশে^র প্রথম। প্রনায়ন করা হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইনসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আইন ও নীতিমালা। আর এসব কারণে মাননীয় প্রধান মন্ত্রি শেখ হাসিনাকে দেওয়া হয়েছে জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ের সর্বোচ্চ পুরস্কার চ্যাম্পিয়ান অফ দ্যা আথ ।
উপসংহার :- আলোচনার এ শেষ প্রান্তে এসে বলতে পারি , জলবায়ুর পরিবর্তন প্রশমন , দারিদ্র নিরসন , টেকসই উন্নয়ন ত্বরানি¦ত করা ্্্্এবং অর্জিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সমবন্টন এ ক্ষেএে অত্যন্ত জরুরি , যার জন্য প্রয়োজন পারস্পরিক সমঝোতাভিওিক ও সমন্বিত উদ্যোগ । এটা নিশ্চিত করতে দরিদ্র ও বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর অধিকারগুলো রক্ষা করতে হবে; জরুরি ও তাৎক্ষণিকভাবে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন অবশ্যই কমাতে হবে ।
যদি এখনই বিশ^ উষ্ঞায়ন থামানো না যায়, তখন গোটা পৃথিবীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য হঠাৎ করে ভেঙ্গে পড়তে পারে নিউইয়র্কের ট্্্্্্্্্ইুন টাওয়ারের মত । বর্তমানে আমাদের বাসযোগ্য পৃথিবীর তাপমাএা যে হারে বাড়ছে এবং এ ধারা অব্যাহত থাকলে অতি নিকট ভবিষ্যতে এই সুন্দর গ্রহটি মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে এবং এক পর্যায়ে তা হয়ে পড়তে পারে শুক্র গ্রহের মত একটা উওপ্ত গ্রহ , যেখানে কোন একদিন যে জীবজগৎ ছিল তা হবে সৌরজগতের বাইরের ভিন গ্রহবাসীর জন্য এক গবেষণার বিষয় ।
তাই আবার ও কবির ভাষায়………. এ বিশ^কে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নব জাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
তাই আসুন আগামী শতাব্দীর পৃথিবীকে মানুষের বাসযোগ্য করে তোলার জন্য আমরা সকলে মিলে একযোগে কাজ করি।
তথ্যসূত্র :-
১.ইধহমষধফবংয ঢ়ৎবংং২৪.পড়স
২.এ,ডি,বি র জলবায়ু বিষয়ক গবেষনা প্রতিবেদন (১৪-৭-১৭ তারিখ প্রকাশিত)
৩.দৈনিক প্রথম আলো।
৪.ইন্টারনেট।

উদ্ভাবনে আমরা কেন পিছিয়ে?

গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স প্রতিবেদন-২০১৮
গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স প্রতিবেদন-২০১৮
আমি যখন কোনো বিদেশির সঙ্গে গল্প করি, তখন আমার দেশটাকে বড় করার জন্য অনেক মিথ্যা কথা বলি। আমার জীবনে যদি মিথ্যা কথার সমষ্টি করা হয়, তার নব্বই ভাগই আমার দেশকে জড়িয়ে মিথ্যা কথা। এর সবই হলো, দেশটাকে অন্যের কাছে বড় করার জন্য। মিথ্যা বলা মহাপাপ হলেও, আমি এই পাপ করেছি। ক্রমাগত করে যাচ্ছি। কিন্তু বাস্তবতা হলো, মিথ্যা বলে আজকের দুনিয়ায় পার পাওয়া কঠিন। বিদেশিদের কাছে আমার দেশটিকে নিয়ে যতই মিছে মিছে গৌরব করি না কেন, তারা ঠিকই সবকিছু জেনে যান। কিছুদিন পরপর যখন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বিভিন্ন বিষয়ে জরিপ বা গবেষণা করে, তখন আমার দেশটির নাম খুঁজে পাওয়া যায় সেসব তালিকায়। সেসব তালিকা দেখলেই বুকটা হাহাকার করে ওঠে। আফসোস লাগে। প্রচণ্ড কষ্ট হয়।

সম্প্রতি প্রকাশিত গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্সে (২০১৮) বাংলাদেশের অবস্থান এশিয়ার সবচেয়ে নিচে। অর্থাৎ আমার দেশটি হলো উদ্ভাবনে সবচেয়ে পিছিয়ে। ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন এমনকি নেপালও আমাদের চেয়ে এগিয়ে। এই খবরটা যে কতটা উদ্বেগের, সেটা সম্ভবত আমাদের সরকার কখনোই উপলব্ধি করে না। গবেষণা করেই যেহেতু আমার জীবিকা চালে, তাই দেশের গবেষণা ও উদ্ভাবনের খোঁজখবর আমি রাখি। আর সে জন্যই, এই রিপোর্টটা আমাকে বিস্মিত করেনি। আমার পরিচিত বিদেশি সহকর্মী বা বন্ধুরা যখন এই আন্তর্জাতিক রিপোর্টটি দেখবেন, তখন তাদের কাছে আর বড় করে কিছু বলার থাকবে না।

গবেষণা ও উদ্ভাবনে আমরা পিছিয়ে কেন?-আমাদের কী মেধাবী ছেলেমেয়ে নেই?-আমাদের কি টাকা নেই?-আমাদের মস্তিষ্ক কি উর্বর নয়? না, এর কোনোটাই না। আমাদের দেশটা অসংখ্য মেধাবীতে ভরা। পরিশ্রমী, স্বপ্নবাজ, উদ্যমী তরুণে ভরা। আমাদের শুধু নেই ব‍্যবস্থাপনা। আমরা পাঁচটা পদ্মা সেতু করতে পারব, কিন্তু যদি গবেষণা ও উদ্ভাবনে এগিয়ে না যাই, তবে দেশটাকে দাঁড় করতে অনেক সময় লাগবে। টেকসই উন্নয়নের (Sustainable Development) জন্য গবেষণা ও উদ্ভাবন হলো অন্যতম শর্ত। আর উন্নত গবেষণার জন্য প্রয়োজন সঠিক ব‍্যবস্থাপনা ও সময় উপযোগী নিয়মনীতি।

আমি যখন দেখি, আমাদের বিজ্ঞান গবেষণাকেন্দ্রগুলোর চেয়ারম্যান, সদস্য হলেন সরকারি কর্মকর্তা, তখন খুব কষ্ট হয়। সরকারি কর্মকর্তা দিয়ে কেন আমরা গবেষণাকেন্দ্র বা গবেষণা সংগঠন চালাব? তাদের তো কোনো গবেষণার অভিজ্ঞতা নেই। তারা হয়তো জীবনে দশটি গবেষণাপত্রও (Research Article) প্রকাশ করেননি। তারা কোনো দিন গবেষণার সঠিক মূল‍্যায়ন ও গুরুত্বই বুঝবেন না। সেই জায়গাগুলোতে থাকার কথা ছিল, দেশের প্রথিতযশা গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসাইটে শিক্ষক ও গবেষকদের। অথবা বিদেশের বিভিন্ন গবেষকদের। দুনিয়ার কোনো উন্নত সমাজের বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান বা বিজ্ঞান সংগঠনে কি সচিবালয়ের লোক বসিয়ে রাখা হয়?

লেখক
লেখক
আমাদের বিশ্ববিদ‍্যালয়গুলোতে গবেষণার অভিজ্ঞতা ছাড়াই হচ্ছে নিয়োগ ও পদোন্নতি। গবেষণাপত্র প্রকাশে কুম্ভিলতার (Plagiarism) আশ্রয় এখন মামুলি বিষয়। বেনামি অনলাইন জার্নালে টাকা দিয়ে হচ্ছে গবেষণাপত্রের প্রকাশ। সেই সব গবেষণাপত্র দেখিয়ে হরহামেশা চলছে পদোন্নতি। বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নামধারী শত-শত পদে বসে আছেন গবেষণাহীন মানুষ। দেশের হাজার-হাজার মেধাবী এক্সপার্টরা দেশে ফিরতে চাইলেও, তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার নেই কোনো সঠিক উদ্যোগ।-কী করে হবে তাহলে উদ্ভাবন?-দেশের বিজ্ঞানমন্ত্রী কি এগুলো দেখেন না? সরকারের নজরে কি এগুলো পড়ে না? গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য প্রধান শর্ত হলো যোগ্য ও মেধাবী লোক নিয়োগ। দ্বিতীয় শর্ত হলো মেধাবীর হাতে পর্যাপ্ত অর্থ জোগান দেওয়া। তিয়াত্তরের নিয়ম-নীতি দিয়ে ইউনিভার্সিটি ও গবেষণাকেন্দ্রগুলোতে এখনো নিয়োগ-পদোন্নতি হচ্ছে। পঞ্চাশ বছরের পুরোনো এই সব নীতি বদলের সময় হয়েছে বহু আগেই। অথচ আমাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।

আমি খুব লক্ষ‍্য করে দেখেছি, গবেষণা বিষয়টাকে আমাদের দেশে কত হালকা করে দেখা হয়। কত হেলায়-ফেলায় দেখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকের কাছেও গবেষণা বিষয়টা পরিষ্কার নয়। গবেষণা ও গবেষক সম্মেলনের নামে আমরা এখনো খাবার-দাবার আয়োজন নিয়েই ব্যস্ত থাকি। গবেষণার নামে প্রতারণায় ভরপুর প্রকাশনা নিয়েই তুষ্ট আছি। বিদেশের নামকরা গবেষক বলতে, সাদা চামড়ার কাউকে ধরে এনে ঢালাও ভাবে প্রচার করছি। গবেষণার ফলাফল কোনো জার্নালে প্রকাশ না করে কিংবা পেটেন্ট না করে, দলবল নেতা নিয়ে হাজির হই পত্রিকা অফিসে! বিজ্ঞান ও গবেষণাবিষয়ক কোনো অনুষ্ঠানেও রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের দাওয়াত করে প্রধান অতিথির আসনে বসিয়ে রাখি।-দুনিয়ার কোথাও গবেষণার এমন সংস্কৃতি আছে বলে আমার জানা নেই।

ইলিশ মাছের পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য উন্মোচন

বিশ্বে প্রথমবারের মতো উন্মোচিত হয়েছে ইলিশ মাছের পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলমের নেতৃত্বে এ গবেষণা করা হয়।

শনিবার সকালে বাকৃবি সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পূর্ণাঙ্গ ইলিশ জিনোম সিকোয়েন্সিং ও অ্যাসেম্বলি টিমের সমন্বয়ক ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলম এ কথা জানান।

গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলম বলেন, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে দুই বছর গবেষণার পর এ সাফল্য পেয়েছেন তারা। প্রথমে দেশের বঙ্গোপসাগর ও মেঘনা থেকে পূর্ণবয়স্ক ইলিশ মাছ সংগ্রহ করেন। এরপর বাকৃবি ফিস জেনেটিক্স অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি এবং পোল্ট্রি বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জিনোমি ল্যাররেটরি থেকে সংগৃহীত ইলিশের উচ্চ গুণগত মানের জিনোমিক ডিএনএ প্রস্তুত করা হয়।

পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের জিনউইজ জিনোম সিকোয়েন্সিং সেন্টার থেকে সংগৃহিত ইলিশের পৃথকভাবে প্রাথমিক জিনোম তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সার্ভার কম্পিউটারে বিভিন্ন বায়োইনফরম্যাটিক্স প্রোগ্রাম ব্যবহার করে সংগৃহীত প্রাথমিক তথ্য থেকে ইলিশের পূর্ণাঙ্গ ডি-নোভো জিনোম সিকুয়েন্স বা জীবনরহস্য আবিষ্কার করা হয়।

তিনি বলেন, ইলিশের জিনোমে ৭৬ লাখ ৮০ হাজার নিউক্লিওটাইড রয়েছে যা মানুষের জিনোমের প্রায় এক চতুর্থাংশ। তবে পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ করে ইলিশ জিনোমে জিনের সংখ্যা জানার কাজ অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সাংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমানে ইলিশের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স জানার মাধ্যমে অসংখ্য অজানা প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে খুব সহজেই। বাংলাদেশের জলসীমার মধ্যে ইলিশের স্টকের সংখ্যা (একটি এলাকায় মাছের বিস্তৃতির পরিসীমা) কতটি এবং দেশের পদ্মা, মেঘনা নদীর মোহনায় প্রজননকারী ইলিশগুলো ভিন্ন ভিন্ন স্টক কিনা তা জানা যাবে এই জিনোম সিকোয়েন্সর মাধ্যমে।

বছরে দুইবার ইলিশ প্রজনন করে থাকে। জিনোম সিকোয়েন্সের মাধ্যমে এই দুই সময়ের ইলিশ জীনগতভাবে পৃথক কিনা তা জানা যাবে। এমনকি কোনো নির্দিষ্ট নদীতে জন্ম নেয়া পোনা সাগরে যাওয়ার পর বড় হয়ে প্রজননের জন্য আবার একই নদীতেই ফিরে আসে কিনা সেসব তথ্যও জানা যাবে এই জিনোম সিকোয়েন্সের মাধ্যমে।

প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের অংশ গ্রহন প্রত্যশা ও প্রাপ্তি ।

<img />
মো: আব্দুল কাদের
সহকারী পরিচালক
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ,সাতক্ষীরা ।

দ্রোহী কবি কাজী নজরুলের ভাষায় ”বিশ্ব জগৎ দেখব আমি আপন হাতের মুঠোয় পুরে ” যদিও কবি আজ আমাদের মাঝে বেচে নাই কিšতু তার স্বপ্ন আজ বাস্তবে রুপ লাভ করেছে । বিদ্রোহী কবির কল্পনার সুফল আমরা ভোগ করছি । ছোট্ট একটা মুঠো ফোনের মাধ্যমে আমরা গোটা বিশ্বকে নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছি । আমাদের প্রত্যাহিক জীবনের আলাপচারিতা ,লেনদেন, কেনাকাট, চিত্তবিনোদন , অফিস কমর্ ( ই- নথির মাধ্যমে ) , খেলাধূলা ,সংবাদ শোনা ,লেখাপড়া এক কথায় নিত্যদিনের অনেক কাজই আমরা ছোট্ট একটা মুঠো ফোনের মাধ্যমে সম্পন্ন করছি । এখন আমরা দেখবো উন্নত বিশ্বের সংগে তাল মিলিয়ে আমরা কতটুকু সামনে কতটুকু অগ্রসর হচ্ছি, কোথায় আমাদের অবস্থান আমাদের নতুন প্রজন্ম কিভাবে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করছে ।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বি,টি,আর,সির পরসিংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪ সালরে জুন থেেক ২০১৮ সালরে জুন র্পযন্ত চার বছরে দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বড়েছে চার কোটি ৯৮ লাখ ৬৬ হাজার ৭৪৯ জন। ২০১৪ সালরে জুন মাসে মোট ইন্টারনটে ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল তিন কোটি ৭৯ লাখ ২৩ হাজার ২৫১ জন। আর ২০১৮ সালরে জুনে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েেছ আট কোটি ৭৭ লাখ ৯০ হাজার। র্অথাৎ, র্বতমানে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৫ শতাংশ। অথচ ২০০৮ সালে দেেশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল মাত্র ২ দশমকি ৭ শতাংশ। র্অথাৎ গত ১০ বছরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৫৩ শতাংশ। বি,টি,আর,সির পরসিংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪ সালরে জুন মাসে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনটে ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছলি ১২ লাখ তনি হাজার ৩১ জন। আর ২০১৮ সালে এসে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৬ লাখ ৮৫ হাজার। অবশ্য ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতষ্ঠিান আইএসপিএবি সূত্র জানায়, প্রকৃতপক্ষে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা র্বতমানে প্রায় এক কোটি।
তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলাদশেরে সাফাল্য :- বিগত ৬ বছরে বাংলাদেশে সরকারী বেসরকারী সকল ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়েছে ।বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (ি ি .িইধহমষধফবংয.মড়া.নফ) বিশ্বের বড় ওয়েভ সাইটগুলোর অন্যতম । এখানে রয়েছে ৫৮ মন্ত্রনালয় ও বিভাগ,৩৫৩ অধিদপ্তর ও অন্যান্য, ৮টি বিভাগ ,৬৮ জেলা,৪৯১টি উপজেলা ,৪৫৫৪ টি ইউনিয়ন এর বিশাল তথ্য ভান্ডার ।এক কথায় বাংলাদেশ সম্পর্কিত সকল তথ্য এখানে পাওয়া যাবে । তাহাছাড়া ব্যবহারের ক্ষেত্র গুলো এরুপ-
ক) শিক্ষা ক্ষেত্রে — তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার শিক্ষা ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফাল্য এনে দিয়েছে ই-বুক ,ই-কন্টেন,অনলাইন প্রশিক্ষন ,অনলাইন ভর্ত্তির আবেদন, অনলাইন পরীক্ষা , অনলাইন ক্লাস ( টেন মিনিট স্কুল,বিড়ি পাঠশালা,মুক্তপাঠ ইত্যাদি) ,মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলিতে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব , মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম সহ নানা সংযোজন শিক্ষা কার্যক্রমকে করেছে গতিশীল ।
খ) ব্যবসা বানিজ্য ক্ষেত্রে- তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যবসা বানিজ্যকে করেছে অধিক গতিশীল । এখন গ্রামের একজন ক্ষুদ্র মুদি দোকানদারকে আর সেজেগুজে টাকা নিয়ে শহরে যেতে হয় না মাল কিনতে । সে এখন মোবাইল ফোনে অর্ড়ার দেয় আর টাকা পাঠায় রকেট কিম্বা বিকাশ এর মাধ্যমে আর মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে তার দোকানে মাল এসে হাজির হয় । বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেেছ অনলাইনে কনোকাটা। ই-কর্মাস প্রতষ্ঠিানগুলোর সংগঠন ই-ক্যাব সূত্র জানায়, গত ঈদুল ফতিরে অনলাইনে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার বেচা-কেনা হয়। গত বছর যা ছলি একশ’ কোটি টাকার কছিু বশেী। র্অথাৎ, এক বছররে ব্যবধানইে উৎসবকে কন্দ্রে করে অনলাইনে বেচা-কেনার পরমিাণ প্রায় তিন গুণ হয়েছে। র্বতমানে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার কেনার র্অডার আসছে অনলাইনে ডেলিভারি ও হচ্ছে প্রায় সমপরমিাণ। পণ্য হাতে পাওয়ার পর তা পছন্দ না হলে সহজে তা পরর্বিতনের সুযোগ থাকায় আগের চেয়ে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে অনলাইনে কেনাকাটা। এমনইভাবে ই-কর্মাস, ই-পেমেন্ট সহ নানাবিধ প্রযুক্তির সংযোজন ব্যবসা বানিজ্যের ক্ষেত্রকে করেছে দিগšত প্রসারী ।
গ) চিকিৎসা ক্ষেত্রে -– বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার চিকিৎসা ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফাল্য এনে দিয়েছে । অনলাইনে রোগী দেখা , অনলাইন রোগীর সিরিয়াল নেয় ,বিদেশী ডাক্তারদের সংগে যোগাযোগ ,পরামর্শ সর্বোপরি টেলিমেডিসিন চিকিৎসা কার্যক্রমকে করেছে গতিশীল । হার্টঅপারেশন, ক্যানন্সারসহ অনেক জটিল রোগের চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে সুন্দর এবং সফলভাবে হচ্ছে ।
ঘ) অন লাইন আয়ের ক্ষেত্রে
র্বতমানে দেশে প্রায় ৬০ হাজার ফ্রি ল্যান্সার তথ্যপ্রযুক্তি বাজারে নিয়মিত সক্রিয়। অনয়িমতি ফ্রি ল্যান্সারের সংখ্যা আরও প্রায় ৭৫ হাজার। সরকারের পরকিল্পনা রয়েছে, ২০২১ সালের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে পেশাজীবি ২০ লাখে উন্নীত করার।
এ ছাড়া র্বতমানে জাপান, কানাডাসহ বিশ্বের প্রায় ১০ টি দেশে সফটওয়্যার রফতানি করছে বাংলাদেশ। বিশেষত বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান ডাটা সফটের জাপানে র্স্মাট ভবন প্রযুক্তি বা¯তবায়ন দেশের জন্য বড় গৌরব বয়ে এনেছে। ২০২১ সালের মধ্যে সফটওয়্যার থেকে এক বিলিয়ান ডলার রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঙ) জাতিসংঘের ই-গর্ভনমেন্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে ১১৫ তম বাংলাদেশ
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিগত ৬ বছরে আশানুরূপ ব্যাপক উন্নয়নের ফলে সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতিসংঘের ই-গর্ভনমন্টে জরিপে ১৫০তম স্থান থেকে ১১৫তম অবস্থান র্অজন করেছে। জাতিসংঘের র্অথনৈতিক ও সামাজিক সর্ম্পক বিভাগ (ইউএনডেসা) পরিচালিত ই-সরকার ডেভেলেপমেন্ট ইনডেক্স (ইজডিআিই) অনুযায়ী, বাংলাদেশ ০.৪৭৬৩ পয়েন্ট পেয়ে এবং গত দুই জরিপে ৩৫ ধাপ এগিয়ে ১৯৩ টি দেশের মধ্যে ১১৫তম স্থানে অবস্থান করে নিয়েছে। যা ২০১৬ সালের জরিপ অনুযায়ী এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২৪তম, ২০১৪ সালে ১৪৮তম এবং ২০১২ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৫০তম।
ডাক, টলেেিযাগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান ‘শেখ হাসনিা’র সরকার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তরি ক্ষত্রে নানান উদ্যোগ গ্রহনের ফলে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ডিজিটাল সরকার ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ দিন দিন অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে।’
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এবং রূপকল্প ২০২১ বা¯তবায়নে সরকার কাজ করছে। মানব সম্পদ সূচক এবং টেলিকমিউনিকেশন সূচককে আমরা বিশষে গুরুত্ব দিচ্ছি এবং ডাটার আর্ন্তজাতিক মান বজায় রাখতে সি,আর,ভি,এস, ওপনে ডাটা র্পোটাল, জাতীয় তথ্য বাতায়ন, এস,ডি,জি র্পোটাল, বিগ ডাটা উদ্যোগ ইত্যাদি সহ নানান প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে যা বাস্তবায়তি হলে অনলাইন র্সাভিস সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আরো ভাল হবে।’
বাংলাদেশ ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বরের আগ র্পযন্ত সর্ম্পূণরূপে একটি কৃিষভিত্তিক দেশ হিসেবে পরিচিত, সেই দেশটিই ২০০৯ থেেক ২০১৮ এর মধ্যে যে রূপান্তর তা বিশ্ব মানচিত্রে উপস্থাপতি হয়েছে তা অভিনন্দনযোগ্য। এজন্য আমাদের নিজেদের কাজ করতে হয়েছে এবং পাশাপাশি পৃিথবীকে জানাতে ও হয়েছে যে আমরা কাজ করছি। আমাদের চারপাশে যে তথ্য উপাত্ত তার পরির্পূণ প্রতিফলন প্রতিবেদেন হয়নি, সেজন্য প্রত্যাশতি প্রকৃত অবস্থান নির্ধারণ করা যায়নি। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ অতীতেরে চেয়ে ভাল সূচকে অবস্থান করছে। র্বতমানে ডিজিটাল বাংলাদেশ কেন্দ্রিক চিন্তার দিক থেকেও সবচেয়ে সুসময়ে অবস্থান করছি আমরা। ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে যে প্িরতষ্ঠানগুলো কাজ করছে তাদের নিজেদের মধ্যে যে সংহতি তা অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে ভাল। এখন তারা সমন্বিত ভাবে কাজ করছে।
সরকার ওপনে ডাটা র্পোটাল এর সাথে সাথে একটা ওপনে ডাটা পলিসি করার সিধান্ত নিয়েছে । ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সংসদে বিবেচনাধীন রয়েছে। কয়েকটি স্বল্পোন্নত দশেরে সাথে এ,ট,ুআই ইতোমধ্যে চুিক্তবদ্ধ হয়েছে যেখানে বাংলাদশেরে মত করে ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করা যায়।
বিভিন্ন সরকারি প্রতষ্ঠিানরে ড্যাসর্বোড তৈরি করা হয়েছে এবং এদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগতিার সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট এই প্রতিযোগতিার মাধ্যমে প্িরতটি মন্ত্রণালয় এবং সরকারি প্িরতষ্ঠানের মধ্যে আšতঃসর্ম্পক তৈরি হয়েছে যা এনালগ থেকে ডিজিটাল সেবার প্রতি সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে আগ্রহী করে তুেলছে। ইউএনডেসার সহযোগতিায় সরকারি বিশাল ডাটা বা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে এবং উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) র্অজনে আইসিটি ফর এসডিজি প্রকল্প চালু করা হয়েছে। একটি সরকারি প্িরতষ্ঠান হিসেবে ডাটা বা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজের ক্ষেত্রে আমরা অনেক সক্ষম হয়েছি। সরকারের বিভিন্ন সেবার মাধ্যমে জনগনের সাথে বিভিন্ন পদ্ধতিতে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। আমরা এখন প্রযুিক্তগত কাঠামো তৈরী করতে বিভিন্ন প্রায়োগিক কৌশল প্রয়োগ করতে সক্ষমতা র্অজন করেছি।”
বিগত বছরগুলোতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় বিভিন্ন সরকারি সেবা পৌঁছে দিতে র্বতমান সরকার নানা র্কাযক্রম গ্রহণ করেছে। সরকারি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে তথ্য হালনাগাদ করার পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি সেবা ডিজিটালাইজ করার মধ্য দিয়ে জনগনের দোরগোড়ায় তথ্যপ্রযুিক্তর ছোঁয়া পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে। ক্রমাগত এই সফলতার ফলস্বরূপ বিশ্বে আইসিটি সেক্টররে সম্মান জনক পুরস্কার ‘ওর্য়াল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমশেন সোসাইটি’ সহ নানা আর্ন্তজাতিক সম্মাননায় ভূষিত হয়েছে বাংলাদেশ। ডিজিটাল সরকারে বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তরি তালকিায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদশেরে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্িরতমন্ত্রী জুনাইদ আহমদে পলক। যুক্তরাজ্যের লন্ডন ভিত্তিক নীতি নির্ধারণী প্িরতষ্ঠান ‘অ্যাপলিটিক্যাল’ প্রকাশিত এই তালিকায় স্থান পান পলক। এর আগে ওর্য়াল্ড ইকোনমিক ফোরাম জুনাইদ আহমেদ পলককে ‘ইয়াং গেøাবাল লিডার-২০১৬’ নির্বাচিত করে।
বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তরি অপব্যবহার : –
দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইন্টারনেটের কল্যাণে মানুেষর জীবন অনেকে সহজ ও গতিশীল হচ্ছে একথা অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু প্িরতটি বিষয়ের ভালো ও মন্দ দুটি দিকই রয়েছে। ইন্টারনেটের খারাপ দিক হলো এর অপব্যবহার।
তরুণ সমাজ তাদের মূল্যবান সময় অপচয় করে ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে। কেউ যদি এগুলোতে অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়ে এবং একারণে যদি তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘিœত হয়, তখনই বাঁধে সমস্যা। এর ফলে ভুক্তভোগীর পাশাপাশি সমস্যায় পড়তে হয় বন্ধু, পরিবার এবং সমাজকে। অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহার অনেকটা মাদকাসক্তির মতো। এতে করে স্থূলতা, ঘুম কমে যাওয়া, সৃজনশীল চšিতা-ভাবনায় বাধা, মানসিক অস্থিরতাসহ নানা সমস্যা দেখা যায়। বাংলা সাহিত্যেরে একজন কবি বলছেনে,‘বিজ্ঞান মানুষকে দিয়িছে বেগ কিন্তু কেড়ে নিয়েছে আবেগ’।আজকাল বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডায় বসলে দখো যায়, যে যার মতো র্স্মাটফোন নিয়ে ব্য¯ত থাকে। বাস বা ট্রেনে চলার সময় অনকেকেই দেখা যায় ফেসবুকিং বা ব্রাউজিং করে র্দীঘ সময় পার করে। অথচ এই র্দীঘ সময়ে একটা ভালো বই পড়া যেতে পারে।
ইন্টারনেট আসক্তি থেকে রেহাই দিতে তরুণদের সমাজকল্যাণ মূলক র্কাযক্রমে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। খেলাধুলা ও চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া অভিভাবকরা সšতানদের কাছে ইন্টারনেটের ভালো ও ক্ষতিকর দুটি দিক নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। শুধু অ্যান্ড্েরয়ড মোবাইল দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ না করে সšতানদের সময় দিতে হবে। এতে তরুণ-তরুণীরা সচেতন হবে। র্সবোপরি সমাজ, পরবিার ব্যক্তি তথা সবার সচতেনতাই পারে এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে।
মাধ্যমিকের ৮০ ভাগ শির্ক্ষাথীর হাতে ইন্টারনেটসহ মোবাইল ফোন’ শিরোনামে একটি খবর (ইত্তফোক ১৬ জুলাই/১৮) প্রকাশিত হয় ।
ঢাকা মহানগরীর মাধ্যমিক বিদ্যালয় র্পযায়ের ৮০ দশমিক ৩ শতাংশ ছাত্রছাত্রী ইন্টারনেটসহ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। আর ৬৫ ভাগ শিক্ষাথীর সামাজকি যোগাযোগ মাধ্যমের একাউন্ট রয়েছে। তাদের মধ্যে ৭২ ভাগ শির্ক্ষাথীর ফেসবুক এবং ৪৭ দশমিক ৫ ভাগ শির্ক্ষাথীর ইউটিউব একাউন্ট আছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় র্পযায়ের ছাত্রছাত্রীদের গণমাধ্যম সাক্ষরতা যাচাই জরিপে এ তথ্য উঠে আসে।
সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভলেপমেন্ট (সাকমিড) আয়োজিত এক গোলটেবিল সভায় জানানো হয়, র্বতমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য প্রযুিক্তগত সেবাকে জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে বিগত এক দশক ধরে ব্যাপকভাবে কাজ করছে। এরই মধ্যে জনগণ তার সুফল পেেত শুরু করেছে। দেশে র্বতমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৮ কোটি ছাড়িয়েছে। তবে আশংকার বিষয় হচ্ছে, আমাদের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ র্বতমানের কিশোর এবং তরুণরা কোনো র্পূব প্র¯তুতি ছাড়াই ইন্টারনেটের মতো ব্যাপক একটি জগতে প্েরবশ করছে এবং অনেক ক্ষেত্রে বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে।

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন না এমন মানুষ নেই বললেই চলে। প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে আমাদের আবেগ-অনুভূতি প্রকাশের ধরন ভীষণভাবে পরির্বতিত হচ্ছে। এই পরর্বিতনরে ফলাফল ইতিবাচক হলে তা জীবনমানকে উন্নত করে, অন্যথায় তা ব্যক্তি ও সমাজ জীবনকে হতাশা গ্র¯ত করে। নিজের অজাšতইে সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের মনন এবং মানসকিতার উপরে কিছু নেতিবাচক প্রভাব ফলেছে।
‘ফেসবুকে নজর রাখছে ১৫০০০ ফেসবুক পুিলশ’ শিরোনামে একটি খবর সম্প্রতি পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । তাতে জানা যায়, ফেসবুকে বিশ্বজুড়ে ব্যবহারকারীদরে পোস্ট করা কমন্টেগুলো নজরদারির আওতায় এনেছে ফেসবুক র্কতৃপক্ষ। আর নজরদারিতে কাজ করছে প্রায় ১৫০০০ ফেসবুক পুলিশ। কোন ফেসবুক পোস্ট আপত্তিকর, বীভস্ভ: বা সমাজরে জন্য ক্ষতিকর মনে করলে, তা যাচাই করে মুছে দিচ্ছেন তারা। নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক একজন ফেসবুক পুিলশ বলনে, ‘প্রতিদিন আমাদের দেখতে হয় এমন কিছু জিনিস,যা আমাদের আতঙ্কিত করে, ¯তম্ভিত করে। মানুেষর শিরচ্ছেদ, প্রাণীদের উপর অত্যাচার এইরকম নানা কিছু।’ এই ব্যাপারে ফেসবুকের র্কমর্কতা মণিকা বীর্কাট জানান, নজরদারির কাজে নিয়োজিত
ফেসবুক পুলিশদের কাজটা কঠিন। তবে এর কোনো বিরূপ প্রভাব যাতে তাদের ওপর না পড়ে সেজন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে । সোশ্যাল মিডিয়ার র্কতৃপক্ষই স্বীকার করেছেন যে, নেতিবাচক কনটেন্ট মানসকিতার উপর প্রভাব ফেল। তাই ব্যক্তিগত জীবনে এর ব্যবহার সীমিত করাই উত্তম।সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে র্পযাপ্ত গবেষণা হওয়া দরকার। এর কুপ্রভাব সর্ম্পকে সঠিক ভাবে জানতে পারলেই প্রযুক্তির সুফল দেশে ও সমাজের প্রত্যকেটি ¯তরে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। এর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের সত্যিকার সুফল পাবেন দেশের জনগণ এবং জ্ঞানভিত্তিক র্অথনীতিকে সুদৃঢ় এবং শক্তিশালী করার হাতিয়ার হবে সোশ্যাল মিডিয়া।
তথ্য প্রযুক্তির ভালো মন্দ উভয় দিক রয়েছে । প্রযুক্তির অপব্যবহার বিশেষ করে স্কুলগামী ছেলে মেয়েদের হাতে ইন্টারনেটসহ মোবাইল ফোন খুবই ক্ষতিকর । এদিকে অভিভাবকদের অধিক সচেতন হওয়া উচিত ।আগামী প্রজন্ম যেন বøু হোয়েল বা নবাগত গেম মম র মত ক্ষতিকর গেমের প্রতি আসক্ত হয়ে তাদের জীবনকে বিসর্জন না দেয় সে দিকে সকলকে সর্তক থাকতে হবে । প্রযুক্তি মানুষের কল্যানে মানুষের দ্বারা সৃষ্ট ,সেই প্রযুক্তি যেন মানব সভ্যাতাকে ধ্বংস না করে । বাংলাদেশ এত অল্প সময়ে তথ্য প্রযুক্তির সকল ক্ষেত্রে যে অভাবনীয় সাফাল্য অর্জন করেছে তা সত্যই প্রশংসার দাবীদার । সাফাল্যের এই ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি এর সুফল ছড়িয়ে দিতে হবে সমাজের সকল ¯তরে তবেই না বাস্তবায়ন হবে বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের রুপকল্প -২০২১ , তথা স্বাধীনতার মহান ¯হপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা ।
তথ্যসূত্র 😦 দৈনিক ইত্তেফাক ,যুগান্তর,কালের কন্ঠ,প্রথম আলো ,বাংলাদেশ প্রতিদিন )